Manipur: গায়ে আগুন লাগানোর হুমকি বিক্ষোভকারীদের, আন্দোলনে তপ্ত মণিপুর

ফের হিংসা ছড়িয়েছে মণিপুরের বেশ কয়েকটি জেলায়। যার ফলে অনেক এলাকায় সম্পূর্ণ কারফিউ জারি করা হয়েছে এবং ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মেইতেই সংগঠন আরামবাই টেঙ্গোলের একজন নেতা এবং আরও কয়েকজন সদস্যকে গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই নতুন করে অশান্তি শুরু হয়। জানা যাচ্ছে ওই নেতার নাম কানন সিং। বিক্ষোভকারীরা রাস্তার মাঝখানে টায়ার এবং পুরনো আসবাবপত্র পুড়িয়ে দেয়। বিমানবন্দরে ঢোকার রাস্তাও ঘেরাও করে রাখে। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কেউ কেউ গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার হুমকিও দেয়।

শনিবার রাতে ইম্ফলের পূর্ব জেলার খুরাই লামলং এলাকায় উত্তেজিত জনতা একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। কোয়াকেইথেলে গুলির শব্দও শোনা গিয়েছে। যদিও কে বা কারা গুলি চালিয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। ধৃত নেতাকে যাতে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওা রুখতে তুলিহালে ইম্ফল বিমানবন্দরের গেটের বাইরেও বিক্ষোভকারীরা জড়ো হয়েছিল। বিক্ষোভকারীরা বিমানবন্দরের রাস্তা অবরোধ করে, এমনকি রাতভর সেখানে ঘুমিয়ে থাকে। নিরাপত্তা বাহিনী উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জের কারণে একজন হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে উত্তেজনাপূর্ণ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রাজভবনের দিকে যাওয়া রাস্তায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বিষ্ণুপুর জেলায় সম্পূর্ণ কারফিউ জারি করা হয়েছে, অন্যদিকে ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিম, থৌবাল এবং কাকচিং উপত্যকা জেলায় পাঁচ বা তার বেশি লোকের জমায়েত নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিম, থৌবাল, কাকচিং এবং বিষ্ণুপুর জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা পাঁচদিনের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে।

একটি ভাইরাল ভিডিওতে বিজেপি রাজ্যসভার সাংসদ লেইশেম্বা সানাজাওবাকে রাস্তায় নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে, 'আমরা শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য খুব চেষ্টা করেছি। যদি তোমরা এমন কাজ করো, তাহলে শান্তি কীভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে? আমি ও সঙ্গে থাকা বিধায়ককে গ্রেফতার করো।' আরামবাই টেঙ্গোল আজ থেকে উপত্যকা জেলাগুলিতে দশ দিনের সম্পূর্ণ বনধের ডাক দিয়েছে। তারা তাদের প্রতিবাদ আরও তীব্র করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মেইতেই এই সংগঠনটি প্রথম থেকেই জাতিগত হিংসায় জড়িত। এই গোষ্ঠীটি সম্প্রতি রাজ্যপালের সঙ্গে আলোচনা করেছে এবং তাদের কিছু অস্ত্রও সমর্পণ করেছে।

২ বছর আগে কুকি এবং মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে জাতিগত হিংসা শুরু হওয়ার পর থেকেই মণিপুরে নিরাপত্তা বাহিনী তল্লাশি অভিযান চালিয়ে আসছে। শনিবার তারা দুটি নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত তিন জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে এবং টেংনোপাল জেলায় ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) উদ্ধার করেছে। ২০২৩ সালের মে মাস থেকে মেইতেই এবং কুকি-জো গোষ্ঠীর মধ্যে জাতিগত হিংসায় ২৬০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং পদত্যাগ করার পর কেন্দ্র ফেব্রুয়ারিতে মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে।